আরব মরুভূমির ঠিক মাঝামাঝি অবস্থিত আমিরাতের আবহাওয়া মূলত গ্রীষ্মপ্রধান। গোটা বছরই তাপমাত্রার পারদ থাকে তিরিশের ওপরে। মার্চ থেকে অক্টোবর মাসে তা গিয়ে পৌঁছায় চল্লিশের কোঠায়। তবুও, পর্যটনের দিক থেকে দুবাই বিশ্বের অনেক দেশের পর্যটকদেরই পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে গত দুই দশকে।
করোনার প্রভাব
করোনা সব দেশেরই পর্যটন খাতে বড় ধাক্কা দিয়েছে। দুবাইয়ের সঙ্গে অন্যান্য দেশের বিমান যোগাযোগ করোনাকালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হয়। শুধু তাই নয়, দুবাইয়ের বাসিন্দার সংখ্যাও কমে যায় ৮ শতাংশ, যা আমিরাত অঞ্চলের ইতিহাসে নজিরবিহীন। কিন্তু কর্তৃপক্ষের আশা, ‘দুবাই এক্সপো’র মতো উৎসবকে সামনে রেখে নতুন করে পর্যটনে নতুন জোয়ার আনা সম্ভব হবে।
ইসরায়েল থেকেও পর্যটক
প্রতি বছর আনুমানিক দুই থেকে তিন কোটি পর্যটক দুবাই বেড়াতে যান। কিন্তু করোনার প্রকোপ তা কমিয়েছে ব্যাপকভাবে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে পর্যটন বন্ধ থাকলেও জুলাই থেকে আবার খুলে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত হওয়ায় সেখান থেকেও পর্যটক আসছেন এখন।
কেন যাবেন দুবাই?
মরুভূমি একদিকে, অন্যদিকে সমুদ্র সৈকত। কিন্তু দুবাই কি শুধু তাই? ঝাঁ চকচকে বহুতলে ভরা দুবাই শহরের চাকচিক্য বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও রয়েছে বহু বিখ্যাত ব্র্যান্ডের দোকান, যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কাছে দুবাইকে কেনাকাটার আকর্ষণীয় গন্তব্য করে তুলেছে।
মশলার বাজার
শুধু ব্র্যান্ডের কেনাকাটাই নয়, দুবাইতে রয়েছে বিশাল আকারের একাধিক সুক বা মশলার বাজার, যার চাহিদাও পর্যটকদের কাছে কম নয়। আরব বিশ্বের এই ধরনের সুকগুলিতে নানা ধরনের মশলা ছাড়াও পাওয়া যায় দামী গালিচা, কাপড়, চা ও ঝাড়বাতি।
গ্রীষ্মের পর্যটন
প্রখর রোদে সমুদ্র সৈকতে না ঘুরতে চাইলে দুবাইয়ের পর্যটকরা যেতে পারেন দুবাই একোয়ারিয়াম ও পানির তলার চিড়িয়াখানায়, যা তাক লাগিয়ে দিতে পারে সব বয়সের পর্যটকদের। এছাড়া ইতিহাসে আগ্রহীদের জন্য রয়েছে আল-ফাহিদি দুর্গ। দুবাইয়ের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য জানতে পর্যটকরা যেতে পারেন গ্লোবাল ভিলেজে, যেখানে প্রায় ৯০টি দেশের সংস্কৃতির নানা দিক তুলে ধরা হয়েছে।
রাতের দুবাই
দুবাইয়ের আকর্ষণ কিন্তু দিনের আলোতেই নিভে যায় না। বরং, রাতে দুবাইয়ের একটি অন্য চিত্র প্রকাশ পায়। পাম জুমেরাহ, যা আসলে সমুদ্রের ওপর একটি কৃত্রিম দ্বীপ, পর্যটকদের কাছে রাতের দুবাইয়ের প্রাণকেন্দ্র। আলোর রোশনাইয়ের সাথে সাথে নানা ধরনের গানবাজনার আসরও বসে সেখানে।
বুর্জ খলিফার গায়ে
মানুষের হাতে তৈরি সবচেয়ে বড় স্থাপত্য দুবাইয়ের বুর্জ খলিফা হোটেল। দুই হাজার ৭১৭ ফুট উঁচু এই হোটেল নানা উপলক্ষে সাজে নানান সাজে। ২০১৯ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই হোটেল সেজে উঠেছিল লাল-সবুজ পতাকার রঙে। সূত্র : ডয়চে ভেলে।